গত কয়েক কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববারও (২৯) দেশের শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। তবে দাম বেড়েছে ইসলামী ধারায় পরিচালিত বেশেরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম। এতে বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক। অবশ্য বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের গতি।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের। তারপরও বেড়েছে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক। তবে বাজারটিতে লেনদেন কমে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। এতে ২৮ কার্যদিবসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন হলো।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এতে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১৩ পয়েন্ট কমে যায়। অবশ্য অল্প সময়ের ব্যবধানেই দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। এতে লেনদেনের ১০ মিনিটের মধ্যে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার কারণে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক একপর্যায়ে ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু প্রথম দুই ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশি কিছু ব্যাংক দাম কমার তালিকায় চলে আসে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতের ওপরও। এতে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকা বড় হয়।
অবশ্য এর মধ্যেও দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখে ইসলামী শরিয়াহ্ ভিত্তিতে পরিচালিত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে দাম কমার তালিকা বড় হলেও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক এবং ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ১৫৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২০৫টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৬৫৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৬২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৮১ কোটি ৩১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৪৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ১৮ আগস্টের পর ডিএসইতে সব থেকে কম লেনদেন হলো।
এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে গ্রামীণফোনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩২ কোটি ৭৯ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইসলামী ব্যাংকের ২৮ কোটি ৮৭ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এমজেএল বাংলাদেশ, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইবনে সিনা, সোনালী আঁশ এবং এডিএন টেলিকম।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৪টির এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Matribhumir Khobor